মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশঃ নভেম্বর ১৭, ২০২৫ সময়ঃ ৬:৩৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৩৪ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

গত বছরের জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার দুপুরে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল–১ এ রায় ঘোষণা করে। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

দুপুর সাড়ে ১২টায় ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পাঠ শুরু হয়, যা ছয়টি অংশে বিভক্ত। রায় ঘোষণার সময় আদালতকক্ষ ছিল জনাকীর্ণ; উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ছাড়াও জুলাই–আগস্টে নিহতদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

রায়ে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরেকটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনাল মন্তব্য করে, “জুলাই অভ্যুত্থানের সময় নির্বিচারে ও নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি না দিলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে না।”

এ মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এটিই কোনো মামলার প্রথম রায়। এর আগে ১০ জুলাই সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি ও যৌথ অপরাধ উদ্যোগসহ পাঁচটি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। একই ট্রাইব্যুনাল গত ২ জুলাই আদালত অবমাননার দায়ে শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

শিক্ষার্থী ও জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের। ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকারের দমন-পীড়নে বহু মানুষ হতাহত হয়। দেড় হাজারের বেশি মানুষকে হত্যার উসকানি, নির্দেশ ও পরিকল্পনা—এমন পাঁচটি অভিযোগই তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশনাসংক্রান্ত অডিও টেপসহ বিভিন্ন প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন। গত ১ জুন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।


আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G